মোঃ নাজমুল হক সেলিম
নিয়ামতপুর(নওগাঁ) প্রতিনিধি:
গত ৩১ জানুয়ারী ৬ষ্ঠ ধাপে অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে বিভিন্ন প্রতীকে অংশ নেওয়া মোট ৩৯ জন চেয়ারম্যান প্রার্থীর মধ্যে ১৯ জন প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হচ্ছে।
নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী, যারা মোট প্রদত্ত ভোটের আট ভাগের একভাগ ভোট পায়নি, তাদের জামানত বাজেয়াপ্ত হচ্ছে বলে নিশ্চিত করেছেন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জিয়াউল হক খান।
নিয়ামতপুর উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, নিয়ামতপুর উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে বিভিন্ন দল থেকে চেয়ারম্যান পদে মোট ৩৯ জন প্রার্থী নির্বাচনে ভোটের লড়াইয়ে অংশ গ্রহণ করেন।
প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, উপজেলার হাজিনগর ইউনিয়নে নির্বাচনে প্রাপ্ত মোট ভোটের সংখ্যা ১৮,০১৭ ভোট। যেখানে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী আব্দুর রাজ্জাক জয় লাভ করে। ৪ জন প্রার্থীর মধ্যে দুজনের জামানত বাজেয়াপ্ত হচ্ছে। তাঁরা হলেন, ইসলামী আন্দোলনের হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী আবুল বাশার। তিনি পেয়েছেন ১,০৯২ ভোট এবং ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী মিনহাজুল হক পেয়েছেন ৮৬৩ ভোট।
চন্দননগর ইউনিয়নে প্রাপ্ত মোট ভোটের সংখ্যা ১৭,৭৪৩ ভোট। এখানে এখানে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী বদিউজ্জামান ঘোড়া প্রতীক নিয়ে জয়ী হয়। ৫ জন প্রার্থীর মধ্যে ৩ জনের জামানত বাজেয়াপ্ত হচ্ছে। তাঁরা হলেন, মোঃ জাকারিয়া (মোটরসাইকেল) প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন (১৫৫) ভোট, মোঃ দেলোয়ার হোসেন (আনারস) প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন (১৭০) ভোট এবং মোঃ বদিউজ্জামান, (চশমা) প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন (১৫৮২) ভোট।
ভাবিচা ইউনিয়নে মোট প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা ২১,১২১ ভোট। এখানে নৌকার প্রার্থী ওবাইদুল হক জয় লাভ করে। ৭ জন প্রার্থীর মধ্যে ৫ জনের জামানত বাজেয়াপ্ত হচ্ছে। তাঁরা হলেন, আব্দুল বারী (চশমা) প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন (৩৮৬) ভোট, জমশেদ আলী, (অটোরিকশা) প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন (৮৯) ভোট, বাংলাদেশ ইসলামি আন্দোলনের প্রার্থী জসিম উদ্দিন মৃধা (হাতপাখা) প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন (৪৮১) ভোট, জহুরুল ইসলাম (ঘোড়া) প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন (২১৪) ভোট এবং দেলোয়ার হোসেন (মোটরসাইকেল) প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন (১০০) ভোট।
নিয়ামতপুর সদর ইউনিয়নে প্রাপ্ত মোট ভোটের সংখ্যা ১৪,৯৫৪ ভোট। এখানে নৌকার প্রার্থী বজলুর রহমান নঈম জয় লাভ করে। ৭ জন প্রার্থীর মধ্যে ৪ জনের জামানত বাজেয়াপ্ত হচ্ছে। তাঁরা হলেন, আব্দুর রহমান (চশমা) প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন (৬৪৬) ভোট, আমিনুর রহমান (মোটরসাইকেল) প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন (২৫৭) ভোট, ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ প্রার্থী একরামুল হক (হাতপাখা) প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন (৩১৭) ভোট এবং হুমায়ন কবির (রজনীগন্ধা) প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন (৮৭) ভোট।
রসুলপুর ইউনিয়নে মোট প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা ২২,৬৮২ ভোট। এখানে নৌকার প্রার্থী মোত্তালিব হোসেন জয় লাভ করে। ৪ জন প্রার্থীর মধ্যে ২ জনের জামানত বাজেয়াপ্ত হচ্ছে। তাঁরা হলেন, আনোয়ারুল ইসলাম(আনারস) প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন (১৪৬৩) ভোট এবং ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ প্রার্থী মাহমুদ আলম,(হাতপাখা) প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন (১৯৭) ভোট।
উপজেলার পাঁড়ইল ইউনিয়নে ৪ জন প্রার্থীর মধ্যে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সৈয়দ মুজিব জয় লাভ করে। ৪ জন প্রার্থীর মধ্যে কারই জামানত বাজেয়াপ্ত হচ্ছে না।
শ্রীমন্তপুর ইউনিয়নে প্রাপ্ত মোট ভোটের সংখ্যা ১৮,৯২৪। এখানে নৌকার প্রার্থী রফিকুল ইসলাম জয় লাভ করে। ৩ জন প্রার্থীর ১ জনের জামানত বাজেয়াপ্ত হচ্ছে। তিনি হলেন, আলমামুন হক (চশমা) প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন (১৫৪১) ভোট।
বাহাদুরপুর ইউনিয়নে মোট প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা ২০,৫৫২ ভোট। এখানে নৌকার প্রার্থী মামুনুর রশিদ জয় লাভ করে। ৫ জন প্রার্থীর মধ্যে ২ জনের জামানত বাজেয়াপ্ত হচ্ছে। তাঁরা হলেন, বাংলাদেশ ইসলামি আন্দোলন প্রার্থী আব্দুল করিম মন্ডল(হাতপাখা) প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন (৬৭৭) ভোট এবং মনজুর রাশেল (মোটরসাইকেল) প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন (১১০২) ভোট।
নিয়ামতপুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জিয়াউল হক খান বলেন, নির্বাচনের নিয়ম অনুসারে মোট প্রদত্ত ভোটের আট ভাগের একভাগ ভোট না পেলে প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়ে যাবে। জামানত বাজেয়াপ্তদের তালিকায় উপজেলার ভাবিচা ও সদর ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি প্রার্থীর নাম রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
Leave a Reply